রীট হলো এক ধরনের আইনি অধিকার যার মাধ্যমে কোন ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের অধিকার লঙ্ঘিত হলে উক্ত ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান তার লঙ্ঘিত অধিকার বাস্তবায়নের জন্য আদালতের নিকট প্রতিকার চাইতে পারে। যে প্রক্রিয়ার মাধ্যমে এই প্রতিকার চাওয়া হয় তাকেই বলা হয় Writ(রীট)। অধিকার রক্ষার ক্ষেত্রে Writ হলো মানব সমাজের অন্যতম সাফল্যের নাম। Writ(রীট) শব্দটির অর্থ হল ‘লিখিত দলিল’ (Written document)
WRIT(রীট) এর প্রকারভেদঃ
বাংলাদেশের সংবিধানের ১০২ নাম্বার আর্টিকেল অনুযায়ী মোট পাঁচ ধরনের Writ(রীট) সম্পর্কে জানা যায়। সেগুলো হলঃ-
ক.নিষেধাজ্ঞামূলক রীট (Writ of prohibition)
খ.হুকুমজারি রীট (Writ of Mandamus)
গ.উৎপ্রেষণমূলক রীট (Writ of Certiorari)
ঘ.বন্দী প্রদর্শন রীট (Writ of Habeas Corpus)
ঙ. কারণ দর্শাও রীট ( Writ of Quo warranto)
রীট কে করতে পারেঃ
দুই ধরনের ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান মূলত Writ(রীট) করতে পারে।
প্রথমত, কোন সংক্ষুব্ধ ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান যার অধিকার ভঙ্গ হয়েছে। তিন ধরনের Writ (রীট) সংক্ষুব্ধ ব্যক্তি করতে পারে সেগুলো হলঃ-
ক.নিষেধাজ্ঞামূলক রীট (Writ of prohibition)
খ.হুকুমজারি রীট (Writ of Mandamus)
গ.উৎপ্রেষণমূলক রীট (Writ of Certiorari)
দ্বিতীয়ত, রাষ্ট্রের যে কোন নাগরিক। দুই ধরনের Writ(রীট) রাষ্ট্রের যেকোনো নাগরিক করতে পারে। সেগুলো হলঃ-
ক.বন্দী প্রদর্শন রীট (Writ of Habeas Corpus)
খ. কারণ দর্শাও রীট (Writ of Quo warranto)
নিষেধাজ্ঞামূলক রীটঃ-
বাংলাদেশের সংবিধানের 102(2)(a)(i) অনুচ্ছেদের প্রথমাংশে Writ of prohibition এর কথা উল্লেখ আছে। বলা হয়েছে ‘ যে কোন সংক্ষুব্ধ ব্যক্তির আবেদন ক্রমে প্রজাতন্ত্র বা কোন স্থানীয় কর্তৃপক্ষের বিষয়ায়াবলীর সাথে সংশ্লিষ্ট যে কোন দায়িত্ব পালনে রত ব্যক্তিকে আইনের দ্বারা অনুমোদিত নয়, এমন কোন কার্য করা হতে বিরত রাখার নির্দেশ প্রদান করিবেন।’
অর্থাৎ, অধঃস্তন আদালত, প্রতিষ্ঠান, কোন কর্তৃপক্ষ, ব্যক্তি যদি তার উপর অর্পিত দায়িত্বের বাহিরে কোন কাজ করতে চায় তাহলে তার বিরুদ্ধে যে রীট করা যাবে সেটাই হলো নিষেদাজ্ঞামূলক রীট (Writ of prohibition).
হুকুমজারী রীটঃ
হুকুমজারি রীট সম্পর্কে বাংলাদেশের সংবিধানের 102(2)(a)(i) অনুচ্ছেদের শেষাংশে বলা হয়েছে। উক্ত অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে যে ‘ কোন সংক্ষুব্ধ ব্যক্তির আবেদন ক্রমে প্রজাতন্ত্র বা কোন স্থানীয় কর্তৃপক্ষের বিষয়ায়াবলীর সাথে সংশ্লিষ্ট যে কোন দায়িত্ব পালনে রত ব্যক্তিকে আইনের দ্বারা তাঁর করণীয় কার্য করিতে নির্দেশ প্রদান করিবেন। অর্থাৎ অধঃস্তন আদালত, প্রতিষ্ঠান, কোন কর্তৃপক্ষ, ব্যক্তি যদি তার উপর অর্পিত দায়িত্ব পালনে অস্বীকৃতি জানায় বা করতে না চায় অথবা করতে কালক্ষেপণ করেন তাহলে উক্ত ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে যে রীট করা যাবে তাই হলো হুকুমজারি রীট(Writ of Mandamus) আমেরিকার জুডিশিয়ারি আইনের ১৩ ধারায় এই রীটের বিধান রয়েছে।
উৎপ্রেষণ রীটঃ-
কোন অধঃস্তন আদালত, কোন কর্তৃপক্ষ, কোন ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান যদি এমন কোন কাজ করে যা তার উপর অর্পিত নয় অর্থাৎ আইনগত ক্ষমতাকে লঙ্ঘন করে কোন কাজ করলে তার বিরুদ্ধে যে রীট করা যায় তাই হল উৎপ্রেষণমূলক রীট( Writ of Certiorari). বাংলাদেশের সংবিধানের 102(2)(a)(ii) অনুচ্ছেদে এই রীটের বিধান রয়েছে।
বন্দী প্রদর্শন রীটঃ-
বন্দী প্রদর্শন কথাটির অর্থ হল কোন ব্যক্তিকে স্বশরীরে আদালতে হাজির করা। বাংলাদেশের সংবিধানের 102(2)(b)(i) অনুচ্ছেদে এই রীটের বিধান রয়েছে। কোন ব্যক্তিকে সরকার বা অন্য কোন ব্যক্তি অথবা প্রতিষ্ঠান আটক করলে সংক্ষুব্ধ ব্যক্তির পক্ষে যে কেউ এই রীট করতে পারেন। এই রীটের মাধ্যমে আদালত আটককারীকে আটককৃত ব্যক্তিকে আদলতে প্রদর্শনের নির্দেশ দেয়।
কারণ দর্শাও রীটঃ
কোন ব্যক্তি যদি এমন কোন সরকারি পদ দাবী করেন অথবা অবৈধ ভাবে এমন কোন পদ দখল করে থাকেন যেখানে থাকার তাঁর কোন যোগ্যতা নেই তখন যেই রীট করা যায় তাকে বলা হয় কারণ দর্শাও রীট(Writ of Quo warranto) সংবিধানের ১০২(২)(b)(ii) অনুচ্ছেদে এই রীটের বিধান রয়েছে।
রীট সম্পর্কিত মামলাঃ
Marbari vs. Madison [Crach 137(1803)]
King vs. Electricity Commission (1924)
Bangladesh vs. Dr. Nilima Ibrahim, 1981 BLD(AD)175
Abdur Rahman vs. Bangladesh, 49 DLR 344
Nurul Islam vs. Bangladesh, 33DLR (1981)
Dr. Mohiuddin Farooque Vs. Bangladesh, 49 DLR (AD)1
Bangladesh vs. Ahmed Nazir, 27 DLR (AD) 41
Kazi Mukhlesur Rahman vs Dr. Chowdhury Mahmood Hasan, 54 (AD) 130
Anwar Hossain Chowdhury vs Bangladesh, 44 DLR (AD) 165
Comments are closed.